স্মার্টফোনের প্রতি আমাদের নির্ভরতা এখন দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দিনে গড়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আমরা এই ছোট্ট স্ক্রিনে ডুবে থাকি—কখনো মজার ভিডিও দেখে, কখনো অন্তহীন স্ক্রলিংয়ে। কিন্তু ফোনের ব্যাটারি যখন লাল সংকেত দেখায়, তখন শুরু হয় অস্বস্তি। চার্জে বসানোর পর সেই অপেক্ষার সময়টা যেন অন্তহীন যন্ত্রণা। তবে একটি কৌশল অনেকের মুখে শোনা যায়—এয়ারপ্লেন মোডে ফোন চার্জ করলে নাকি দ্রুত চার্জ হয়। কিন্তু এই কৌশল কি সত্যিই কার্যকর?
‘এয়ারপ্লেন মোড’ কীভাবে কাজ করে?
সাধারণ অবস্থায় স্মার্টফোন সার্বক্ষণিক নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। সেল টাওয়ারের সঙ্গে অবিরাম যোগাযোগ, নেটওয়ার্ক সিগন্যাল সার্চিং, এবং লোকেশন নির্ধারণের জন্য জিপিএস ব্যবহারের মতো কাজগুলো চলতে থাকে। আধুনিক ফোনগুলো স্যাটেলাইটের পরিবর্তে নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক ‘অ্যাসিস্টেড জিপিএস’ ব্যবহার করে, যা ব্যাটারি দ্রুত খরচ করে। এয়ারপ্লেন মোড চালু করলে ফোনের সব রেডিও সিগন্যাল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ফোন কম শক্তি ব্যবহার করে, এবং চার্জিংয়ের জন্য বেশি শক্তি জমা হয়। এর ফলে চার্জিং তুলনামূলক দ্রুত হয়।
কতটা সময় বাঁচে?
প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট ‘হাও স্টাফ ওয়ার্কস’ এবং মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভেরাইজনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এয়ারপ্লেন মোডে চার্জ দিলে কিছুটা সময় বাঁচানো সম্ভব। তবে এতে খুব বেশি উৎসাহিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ সাশ্রয়ের পরিমাণ খুব বেশি নয়। প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট সি-নেট কয়েক বছর আগে এ বিষয়ে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিল। তাদের ফলাফলে দেখা গেছে, এয়ারপ্লেন মোডে চার্জ দিলে এক ক্ষেত্রে মাত্র ৪ মিনিট এবং অন্য ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১১ মিনিট সময় বাঁচে।
উপসংহার
এয়ারপ্লেন মোডে ফোন চার্জ করলে কিছুটা দ্রুত চার্জ হতে পারে, তবে এর প্রভাব খুব বেশি উল্লেখযোগ্য নয়। তাই জরুরি মুহূর্তে এই কৌশল কিছুটা সাহায্য করলেও, চার্জিংয়ের সময় ব্যাপকভাবে কমানোর জন্য এটি কোনো জাদুকরী সমাধান নয়।