ঢাকা, ১৯ জুলাই ২০২৫: বিশাল সমুদ্রের গতিশীল ও রহস্যময় পরিবেশে পেঙ্গুইনরা কীভাবে চলাচল করে এবং তাদের বাসায় ফিরে আসে, তা নিয়ে নতুন গবেষণা বিজ্ঞানীদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনদের সমুদ্রে চলাচলের অবিশ্বাস্য দক্ষতা নিয়ে জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব অ্যানিমেল বিহেভিয়ারের বিজ্ঞানীরা চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছেন। এই গবেষণায় দেখা গেছে, উড়তে না পারা এই সামুদ্রিক পাখিরা অসাধারণ নাবিকের মতো সমুদ্রের স্রোত বুঝে চলাচল করে এবং শক্তি সাশ্রয় করে বাসায় ফিরে আসে।গবেষণার অংশ হিসেবে আর্জেন্টিনার সান মাটিয়াস উপসাগরে ২৭টি প্রাপ্তবয়স্ক ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। বিজ্ঞানীরা এসব পেঙ্গুইনের শরীরে জিপিএস এবং মোশন সেন্সর সংযুক্ত করে তাদের চলাচলের ধরন বিশ্লেষণ করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনরা শক্তিশালী সাঁতারু এবং সমুদ্রের স্রোতের ওপর ভিত্তি করে তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে। শান্ত স্রোতে তারা সরলরেখায় সাঁতার কাটে, আর শক্তিশালী স্রোতের সময় তারা স্রোতের প্রবাহ অনুসরণ করে দীর্ঘতর পথে চলে, যা তাদের শক্তি সাশ্রয়ে সহায়তা করে।
গবেষক রিচার্ড মাইকেল গানার জানান, পেঙ্গুইনরা সমুদ্রের স্রোত এবং ভূমির স্থানচ্যুতির মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে। তারা স্রোতের ধরন অনুযায়ী গতিপথ সংশোধন করে এবং শক্তি সংরক্ষণ করে শিকার ও বাসায় ফেরার কাজে দক্ষতা দেখায়। আশ্চর্যজনকভাবে, এই পেঙ্গুইনরা সংক্ষিপ্ততম পথের পরিবর্তে স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে, যা তাদের জন্য বেশি কার্যকর। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনরা সমুদ্রের ১০ মিটারেরও বেশি গভীরে ডুব দিয়ে খাবার সংগ্রহ করে এবং জোয়ারের স্রোত ব্যবহার করে বাসায় ফিরে আসে।
বিস্ময়করভাবে, দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করেও এই পেঙ্গুইনরা অবিশ্বাস্য নির্ভুলতার সঙ্গে বাসায় ফিরে আসে। গবেষণা অনুযায়ী, ৮৫ শতাংশ ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইন তাদের প্রস্থান বিন্দুর ৯৮৪ ফুটের মধ্যে ফিরে আসে। এমনকি ৩১ মাইল দীর্ঘ যাত্রায়ও তাদের ফিরে আসার হার ৯৯ শতাংশের বেশি। রাতের বেলায় ফিরে আসা পেঙ্গুইনরাও একই রকম নির্ভুলতা দেখায়। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, দৃশ্যমান কোনো ল্যান্ডমার্ক ছাড়াও পেঙ্গুইনরা চৌম্বক ক্ষেত্র, ঘ্রাণশক্তি বা ইনফ্রাসাউন্ডের মতো কম ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ ব্যবহার করে তাদের পথ খুঁজে পায়।
এই গবেষণা সমুদ্রের গভীরে পেঙ্গুইনদের জীবনযাত্রা ও তাদের অসাধারণ নেভিগেশন দক্ষতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই তথ্য ভবিষ্যতে সামুদ্রিক প্রাণীদের সংরক্ষণ ও তাদের আচরণ বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Saturday, July 19, 2025
Author: DhakaGate Desk
Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.
এ সম্পর্কিত আরও খবর
- ব্লগার মন্তব্
- ফেইসবুক মন্তব্য