অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সাধারণত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়, যা সময়ের সাথে সাথে চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতা হারায়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবার ১০০ শতাংশ চার্জ করলে ব্যাটারি উচ্চ ভোল্টেজে দীর্ঘ সময় থাকে, যা এর অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক গঠনে চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে ব্যাটারির ক্ষমতা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত দ্রুত হ্রাস পায়। প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞরা এই প্রক্রিয়াকে ‘ব্যাটারির কেমিক্যাল এজিং’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রাথমিকভাবে এর প্রভাব বোঝা না গেলেও, কয়েক মাস পর থেকে ব্যাটারির চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়া বা ফোন অতিরিক্ত গরম হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
বর্তমানে হালনাগাদ প্রযুক্তির স্মার্টফোনে শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়, যা দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহারের সুবিধা দেয়। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের পরামর্শ, ব্যাটারির চার্জ ৫০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখলে এর আয়ু বৃদ্ধি পায়। বারবার পুরোপুরি চার্জ শেষ করা বা ১০০ শতাংশ চার্জ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এই সমস্যা সমাধানে অনেক স্মার্টফোনে ব্যাটারি সুরক্ষার জন্য বিশেষ ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, স্যামসাংয়ের কিছু মডেলে ‘প্রটেক্ট ব্যাটারি’ ফিচার রয়েছে, যা চার্জ ৮৫ শতাংশে পৌঁছালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে, গুগল পিক্সেল ফোনে ‘চার্জিং অপটিমাইজেশন’ ফিচার চার্জ ৮০ শতাংশে থামিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত চার্জের পাশাপাশি তাপমাত্রাও ব্যাটারির উপর বড় প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পরিবেশে ফোন ব্যবহার করলে ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফোনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের ব্যাটারির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩২ থেকে ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
ব্যাটারির দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, ফোন চার্জের সময় মূল চার্জার ব্যবহার করা, অতিরিক্ত গরম পরিবেশ এড়ানো এবং চার্জ ৫০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখা। এই সহজ পদক্ষেপগুলো মেনে চললে স্মার্টফোনের ব্যাটারির আয়ু অনেকাংশে বাড়ানো সম্ভব।