চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে। ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর এআই ইনস্ট্রাকশন’ নামের এই উদ্যোগের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় চার লাখ শিক্ষককে এআই-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রকল্পে ওপেনএআইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমেরিকান ফেডারেশন অব টিচার্স (এএফটি), মাইক্রোসফট, অ্যানথ্রপিক এবং ইউনাইটেড ফেডারেশন অব টিচার্স।ওপেনএআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষে এআই ব্যবহারের কৌশল শেখানো হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য নিউইয়র্কে একটি প্রধান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখান থেকে দেশব্যাপী আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এই উদ্যোগ সম্পর্কে ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান বলেন, ‘শিক্ষকেরাই শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের মূল শক্তি। শ্রেণিকক্ষে এআই ব্যবহারের পথ তাঁদের নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে। আমরা তাঁদের এই যাত্রায় সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ এএফটির প্রেসিডেন্ট র্যান্ডি ওয়েইনগার্টেন বলেন, ‘এআই প্রযুক্তি অপার সম্ভাবনার পাশাপাশি জটিলতা ও ঝুঁকি নিয়ে এসেছে। আমাদের দায়িত্ব হলো এই প্রযুক্তি শিক্ষার্থী ও সমাজের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।’
সম্প্রতি গ্যালাপের এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ১০ জন শিক্ষকের মধ্যে অন্তত ৬ জন এআই টুল ব্যবহার করছেন। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা সপ্তাহে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত সময় বাঁচাতে পারছেন।
প্রকল্পটির জন্য মাইক্রোসফট ১২.৫ মিলিয়ন ডলার, ওপেনএআই ১০ মিলিয়ন ডলার (৮ মিলিয়ন নগদ এবং ২ মিলিয়ন প্রযুক্তিগত সহায়তা) এবং অ্যানথ্রপিক প্রথম বছরের জন্য ৫০০,০০০ ডলার বিনিয়োগ করবে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে অবস্থিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই শরতে প্রথম প্রশিক্ষণ শুরু হবে, যা পরবর্তীতে দেশব্যাপী বিস্তৃত হবে।
এই প্রশিক্ষণে শিক্ষকরা এআই টুল যেমন চ্যাটজিপিটি, কপাইলট এবং ক্লড ব্যবহার করে পাঠ পরিকল্পনা তৈরি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকটিভ শিক্ষণ এবং নৈতিকভাবে এআই ব্যবহারের কৌশল শিখবেন। এই উদ্যোগ শিক্ষায় এআইয়ের নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করবে।[