বাংলাদেশি উদ্ভাবক এ কে এম গনিউল জাদীদ উদ্ভাবন করেছেন একটি স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ, যা দেশের প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও ডিজিটালভাবে শক্তিশালী করতে সক্ষম।
গনিউল জাদীদের মাথায় এই স্মার্ট ফ্রিজ তৈরির ধারণা আসে শহরের ব্যস্ত কর্মজীবীদের জন্য খাবার সরবরাহে সহায়ক একটি ভেন্ডিং মেশিন তৈরির পর। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি এই ফ্রিজ তৈরির কাজ শুরু করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে সফটওয়্যার উন্নয়নে কাজ করেন। তিনি জানান, করপোরেট অফিস ও শিল্পকারখানার কর্মীদের কাছে প্রাকৃতিক ও নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন।
স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজটি কেবল একটি রেফ্রিজারেটর নয়, বরং এটি একটি প্রযুক্তিনির্ভর পূর্ণাঙ্গ খাদ্য সরবরাহ অবকাঠামো। এতে রয়েছে রিয়েল টাইম ইনভেন্টরি ট্র্যাকিং, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং ডেটা অ্যানালিটিকস সুবিধা। এর মাধ্যমে কর্মজীবী মানুষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ন্যাকস, পানীয়, রেডি মিল ও হিমায়িত পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অংশীদারত্বে, বিশ্বব্যাংক-অর্থায়িত এজ প্রকল্পের অধীনে। দেশীয় ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সহযোগিতায় ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এর বাণিজ্যিক উতপাদন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সম্প্রতি দেশের প্রথম বেয়ার সামিট ও ন্যাশনাল সেমিকন্ডাক্টর সিম্পোজিয়ামে স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজটি প্রদর্শন করা হয়। দর্শনার্থীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ফ্রিজ থেকে খাবার সংগ্রহের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ব্যাপক আগ্রহ দেখান।
প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাহদী মুকুট বলেন, "দেশীয় উদ্ভাবকেরা আমাদের নিজস্ব সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমি সামিটে ফ্রিজটি ব্যবহার করেছি—এটি সত্যিই চমতকার একটি অভিজ্ঞতা।"
উদ্ভাবক গনিউল জানান, এই প্রকল্পে তার সঙ্গে আছেন ইলা শারমিন, মুক্তাদির শরীফ ও মোশাররফ হোসেন টিপু। এরই মধ্যে অনেক দেশীয় প্রতিষ্ঠান তাদের প্রযুক্তিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গনিউল জাদীদ রংপুর জিলা স্কুল ও ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রথম ব্যাচের স্নাতক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রযুক্তি পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ দেশের আইওটি খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।