Monday, August 18, 2025

এআই-এর সাহায্যে নতুন ধরনের নক্ষত্র বিস্ফোরণ আবিষ্কার: কৃষ্ণগহ্বরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার বিরল ঘটনা

 মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো একটি বিশাল নক্ষত্রের বিস্ফোরণের ঘটনা রেকর্ড করেছেন, যা একটি কৃষ্ণগহ্বরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার সময় ঘটেছে। এআই-চালিত বিশেষ টুলের সাহায্যে এই বিরল মহাজাগতিক ঘটনা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নতুন শ্রেণির নক্ষত্র বিস্ফোরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার জুইকি ট্রানজিয়েন্ট ফ্যাসিলিটিতে ‘এসএন ২০২৩ জেকেডি’ নামের এই নক্ষত্রটি প্রথম পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রায় ৭৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরে, ন্যূনতম নক্ষত্র গঠনের কার্যকলাপসহ একটি ছায়াপথে এই অস্বাভাবিক ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা হয়। এআই-এর বিশেষভাবে ডিজাইন করা টুলস এই আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক অ্যাশলে ভিলার বলেন, “বিস্ফোরণের আগে নক্ষত্রটির সঙ্গে কৃষ্ণগহ্বরের মিথস্ক্রিয়ার স্পষ্ট লক্ষণ দেখা গেছে। আমরা মনে করি, এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন শ্রেণির বিস্ফোরণের অংশ হতে পারে। এআই আমাদের এই বিরল ঘটনা শনাক্ত করতে সাহায্য করেছে।”

প্রাথমিকভাবে এই নক্ষত্রটিকে একটি সাধারণ সুপারনোভা বলে মনে হয়েছিল, যেখানে উজ্জ্বল শিখা সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে কমে যায়। কিন্তু কয়েক মাস পরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবার এর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেতে দেখেন। ঐতিহাসিক তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, বিস্ফোরণের আগে প্রায় চার বছর ধরে এই সিস্টেমের উজ্জ্বলতা ক্রমাগত বাড়ছিল। এই অস্বাভাবিক আচরণ ইঙ্গিত দেয় যে নক্ষত্রটি তীব্র মহাকর্ষীয় চাপের মধ্যে ছিল, সম্ভবত একটি কৃষ্ণগহ্বরের কক্ষপথে আটকে গিয়েছিল। আলোক বক্ররেখা ও বর্ণালি বিশ্লেষণে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে নক্ষত্রটি শেষ বছরগুলোতে দুটি উল্লেখযোগ্য বিস্ফোরণের সম্মুখীন হয়েছিল, যার ফলে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস নির্গত হয়। প্রাথমিক বিস্ফোরণ তরঙ্গের কারণে প্রথম শিখর এবং দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষের ফলে কয়েক মাস পরে দ্বিতীয় শিখর তৈরি হয়।

ইনস্টিটিউট ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ফান্ডামেন্টাল ইন্টারঅ্যাকশনের গবেষক আলেকজান্ডার গ্যাগলিয়ানো বলেন, “কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষীয় টান ধীরে ধীরে নক্ষত্রটিকে ভেঙে ফেলে এবং এটি প্রাকৃতিকভাবে বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই কৃষ্ণগহ্বর এটিকে গ্রাস করে নেয়। এই ধরনের ঘনিষ্ঠ মিথস্ক্রিয়া অত্যন্ত বিরল। এআই-এর ব্যবহার আমাদের এমন জটিল ঘটনা বিস্তারিতভাবে শনাক্ত করতে সহায়তা করছে।”

এই গবেষণার পূর্ণাঙ্গ তথ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ভবিষ্যতে ভেরা সি রুবিন অবজারভেটরির মতো উন্নত টেলিস্কোপগুলো এআই-চালিত রিয়েল-টাইম শনাক্তকরণের মাধ্যমে আরও বিরল মহাজাগতিক ঘটনা আবিষ্কার ও বিশ্লেষণে সহায়তা করবে। এটি বাইনারি সিস্টেমে বিশাল নক্ষত্রের জীবনচক্র সম্পর্কে আরও গভীরভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি করবে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.