এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে নাসার Mars Reconnaissance Orbiter-এর SHARAD (SHAllow RADar) নামের বিশেষ রাডার যন্ত্র। এই যন্ত্রের মাধ্যমে রাডার তরঙ্গের গতি ও ক্ষয়ের মাত্রা বিশ্লেষণ করে গ্লেশিয়ারের ভেতরের বরফ ও পাথরের অনুপাত নির্ধারণ করেছেন গবেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিশুদ্ধ বরফ ভবিষ্যতে মঙ্গলে মানব মিশনের জন্য একটি সম্ভাবনাময় সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। কারণ, বিশুদ্ধ বরফ সহজেই গলিয়ে পানি, অক্সিজেন এবং রকেটের জ্বালানি উৎপাদন করা সম্ভব, যা মিশনের জন্য শক্তি সাশ্রয়ী হতে পারে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই বরফ মঙ্গলের মাটির উপর ধুলার একটি পাতলা স্তরের নিচে সংরক্ষিত রয়েছে। এই ধুলার স্তর বরফকে মারাত্মক পরিবেশগত প্রতিকূলতা থেকেও রক্ষা করে চলেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মঙ্গলের এই বরফ দুই ধরনের প্রক্রিয়ায় তৈরি হতে পারে। প্রথমটি হলো—মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল থেকে বরফবৃষ্টির মাধ্যমে, এবং দ্বিতীয়টি—জমাট বাষ্প সরাসরি মাটির উপর পড়ে বরফে পরিণত হওয়া। গবেষণায় আরও বলা হয়, এই বরফ মাটির নিচের গর্তে গ্যাস জমে তৈরি হয়নি, কারণ সে ক্ষেত্রে বরফে অধিক পরিমাণে ময়লা বা অমিশ্রণ থাকার কথা, যা এখানে দেখা যায়নি।
গবেষণার সহ-লেখক এবং কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আইজ্যাক স্মিথ বলেন, “আমরা যেসব অঞ্চল পরীক্ষা করেছি, সব ক্ষেত্রেই বরফের বিশুদ্ধতার মাত্রা প্রায় একই ছিল। এটি বোঝায় যে, হয় মঙ্গলে একবারে একটি বিশাল বরফযুগ ঘটেছিল, অথবা বহুবার একই ধরনের বরফ জমার প্রক্রিয়া ঘটেছে।”
এই গবেষণা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে Science Direct জার্নালে। বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, মঙ্গলের এই বিশুদ্ধ বরফ একদিন মানব সভ্যতার জন্য নতুন আশার দ্বার খুলে দিতে পারে।