Tuesday, July 29, 2025

ভূমিকম্পে আগাম সতর্কবার্তা দেবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন, বাংলাদেশসহ ৯৮টি দেশে চালু গুগলের সিস্টেম

ভূমিকম্পের মতো প্রাণঘাতী দুর্যোগে আগাম সতর্কবার্তা পেতে এখন আর আলাদা যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনেই মিলছে এমন সুবিধা। গুগলের ‘অ্যান্ড্রয়েড আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেম’ এখন বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৯৮টি দেশে চালু রয়েছে।

প্রযুক্তিটির মাধ্যমে ভূমিকম্পের কয়েক সেকেন্ড আগেই সতর্কবার্তা পেয়ে মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারছে, যা জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গুগল ২০২০ সালে প্রথম এ প্রযুক্তি চালু করে। এরপর ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটি কোটি কোটি মানুষকে আগাম সতর্কতা দিয়ে নিরাপদ থাকতে সহায়তা করেছে।

অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ‘অ্যাক্সিলারোমিটার’ সেন্সর ব্যবহার করেই কাজ করে এই প্রযুক্তি। ভূমিকম্পের সময় দুটি কম্পন তরঙ্গ সৃষ্টি হয়—পি-ওয়েভ (কম ক্ষতিকর ও দ্রুতগতির) এবং এস-ওয়েভ (ধ্বংসাত্মক ও ধীরগতির)। যখন একাধিক ফোন পি-ওয়েভ শনাক্ত করে, তখন তাক্ষণিকভাবে গুগলের সার্ভারে সেই তথ্য পাঠানো হয়। গুগল দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণ করে এস-ওয়েভ আসার আগেই আশপাশের ব্যবহারকারীদের ফোনে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে দেয়।

এই সতর্কতা ফোনে পপ-আপ নোটিফিকেশন আকারে আসে, যা ১০ থেকে ৬০ সেকেন্ড আগেই ব্যবহারকারীকে জানান দেয় ভূমিকম্প আসছে। এই সময়েই কেউ টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে বা বাইরে নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে পারেন।

গুগলের তথ্যমতে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এ সিস্টেমের মাধ্যমে ১৮ হাজারের বেশি ভূমিকম্প শনাক্ত করা হয়েছে এবং ৭৯ কোটিরও বেশি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে।

এই প্রযুক্তি সফলভাবে সতর্কবার্তা দিয়েছে ২০২৩ সালের তুরস্ক-সিরিয়া (৭.৮ মাত্রা), ফিলিপাইন (৬.৭ মাত্রা), নেপাল (৫.৭ মাত্রা) এবং ২০২৫ সালের তুরস্কের ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পের সময়।

এক জরিপে দেখা গেছে, ২০২৩-২০২৪ সালের মধ্যে দেড় লাখ ব্যবহারকারীর মধ্যে ৭৯ শতাংশ জানিয়েছেন, সতর্কবার্তা পেয়ে তারা নিরাপদ আশ্রয় নিতে পেরেছেন।

বাংলাদেশে কীভাবে চালু করবেন?

২০২২ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশেও এই প্রযুক্তি চালু হয়েছে। এটি চালু করতে চাইলে—
১. ফোনের Settings মেনুতে যান
২. Safety & emergency বা Location অপশনে ক্লিক করুন
৩. সেখানে Earthquake alerts অপশন খুঁজে বের করুন
৪. অপশনটি অন করে দিন

এতে আপনার ফোন ভূমিকম্প শনাক্ত করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কবার্তা পাঠাবে।

কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তিটি কার্যকর হলেও এতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। কখনো ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা যায় না বা সতর্কবার্তা পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে গুগল এসব সমস্যা দূর করতে প্রতিনিয়ত আপডেট ও উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এটি ভবিষ্যতে একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারে বলেই মনে করছেন গবেষকরা।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.