কেন এত স্ক্রল করি?
যুক্তরাজ্যের লিডস বেকেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী এইলিশ ডিউক বলেন, “ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রল করা আমাদের এমন একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, যা আমরা নিজেরাও খেয়াল করি না।” এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ মনে করে তারা প্রতি ১৮ মিনিটে একবার ফোন দেখে, কিন্তু বাস্তবে তারা এর চেয়ে অনেক বেশি সময় ফোনে ব্যয় করে।
মস্তিষ্কে কী ঘটে?
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন বা আনন্দদায়ক কিছু দেখলে মস্তিষ্কে সুখানুভূতি তৈরি হয়। চকলেট খাওয়া বা প্রিয় গান শোনার মতো ফোনে মজার কনটেন্ট দেখেও এই অনুভূতি তৈরি হয়, যা আমাদের বারবার স্ক্রল করতে প্ররোচিত করে। তবে মস্তিষ্কের একটি অংশ আমাদের কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য সংকেত দেয়, কিন্তু তরুণদের ক্ষেত্রে এটি প্রায়ই ব্যর্থ হয়।
স্ক্রলিং কমানোর ৩টি সহজ উপায়
বিশেষজ্ঞরা ফোন স্ক্রলিংয়ের নেশা কমাতে তিনটি সহজ পরামর্শ দিয়েছেন:
- ফোন থেকে কিছুক্ষণ দূরে থাকুননিয়মিত বিরতি নিন। ফোন পাশে না রেখে বাইরে হাঁটতে যান, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন বা জিমে সময় কাটান। ফোন থেকে দূরে থাকলে মস্তিষ্কও বিশ্রাম পায়।
- বাস্তব জিনিসে মন দিনফোনে যা করেন, তা ফোনের বাইরে করার চেষ্টা করুন। যেমন, সময় দেখার জন্য সাধারণ ঘড়ি ব্যবহার করুন বা অনলাইনের পরিবর্তে কাগজের বই পড়ুন। এতে স্ক্রল করার প্রবণতা কমবে।
- নিজের অভ্যাস নিয়ে ভাবুনফোন হাতে নেওয়ার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, “আমি এটা এখন কেন তুললাম?” সচেতনভাবে ভাবলে অভ্যাস বদলানো সহজ হয়। যেমন, ক্ষুধা লাগলে খাওয়ার প্রয়োজন বুঝতে পারি, তেমনি ফোন স্ক্রল করার আগে এটি প্রয়োজন কিনা তা ভেবে দেখুন।
সচেতনতাই মুক্তির পথ
ফোন স্ক্রল করা স্বাভাবিক হলেও, এটি যদি সময় নষ্ট করে বা কাজে বাধা দেয়, তবে সচেতনতা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটু ইচ্ছা ও সচেতনতার মাধ্যমে এই অভ্যাস ধীরে ধীরে বদলানো সম্ভব। ফোনের প্রতি নির্ভরতা কমিয়ে জীবনের অন্যান্য কাজে মনোযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।