বর্তমান ডিজিটাল যুগে ফেসবুক শুধুমাত্র বিনোদন বা সময় কাটানোর মাধ্যম নয়, এটি এখন অনেকের জন্য আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। অনেকেই প্রশ্ন করেন, ফেসবুকে ১০০০ ফলোয়ার হলে কত টাকা আয় করা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে ফেসবুকের মনিটাইজেশন নীতি এবং আয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।
ফেসবুক মনিটাইজেশনের শর্তাবলী
ফেসবুক থেকে আয় করার জন্য প্রথম শর্ত হলো আপনার ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইল মনিটাইজড হওয়া। ফেসবুকের মনিটাইজেশন প্রক্রিয়া মেটার ‘মেটা ফর ক্রিয়েটরস’ প্রোগ্রামের আওতায় পরিচালিত হয়। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে কনটেন্ট নির্মাতারা ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপন, ফ্যান সাবস্ক্রিপশন, ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট এবং রিলস বোনাসের মতো বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারেন। তবে, এই সুবিধাগুলো পেতে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়।
মাত্র ১০০০ ফলোয়ার থাকলে ফেসবুকের সরাসরি মনিটাইজেশন প্রোগ্রাম যেমন ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপন বা বোনাস প্রোগ্রাম থেকে আয় করা সম্ভব নয়, কারণ এর জন্য ফলোয়ার ও ভিউ টাইমের নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করতে হয়। তবে, ১০০০ ফলোয়ার থাকলেও ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ বা পার্টনারশিপের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। যদি আপনার কনটেন্টের রিচ ভালো হয় এবং ভিডিওগুলোতে উল্লেখযোগ্য ভিউ আসে, তাহলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তির মাধ্যমে আয়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
১০০০ ফলোয়ারে আয়ের সম্ভাবনা
এছাড়া, ফেসবুকের ‘স্টার প্রোগ্রাম’ এর মাধ্যমে ১০০০ ফলোয়ার থাকলেও আয় করা সম্ভব। এই প্রোগ্রামে দর্শকরা আপনার রিলস বা ভিডিওতে স্টার পাঠাতে পারেন, যার বিনিময়ে আপনি অর্থ পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রতি ১০০ স্টারের জন্য ১ ডলার আয় করা যায়।
১০০০ ফলোয়ার থাকলে সরাসরি ফেসবুক মনিটাইজেশন থেকে আয় শুরু করা কঠিন হলেও, স্টার প্রোগ্রাম বা ব্র্যান্ড স্পনসরশিপের মাধ্যমে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে কনটেন্টের গুণগত মান, দর্শকের ব্যস্ততা (এনগেজমেন্ট) এবং ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির ওপর। উদাহরণস্বরূপ, স্টার প্রোগ্রামে যদি দর্শকরা ১০০০ স্টার পাঠান, তাহলে আপনি ১০ ডলার (প্রায় ১২০০ টাকা) আয় করতে পারেন। তবে, ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ থেকে আয় কয়েক হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যদি আপনার কনটেন্ট ভাইরাল হয় বা নির্দিষ্ট শ্রোতাদের কাছে আকর্ষণীয় হয়।
আয় বাড়ানোর উপায়
ফেসবুক থেকে আয় বাড়াতে নিয়মিত উচ্চ-মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে, ফলোয়ার বাড়াতে হবে এবং দর্শকদের সঙ্গে ব্যস্ততা বজায় রাখতে হবে। রিলস বা ভিডিও তৈরি করার সময় এমন বিষয় নির্বাচন করুন, যা দর্শকদের আকর্ষণ করবে, যেমন বিনোদনমূলক, শিক্ষামূলক বা হাস্যরসাত্মক কনটেন্ট। এছাড়াও, ফেসবুকের নীতিমালা সম্পর্কে আপডেট থাকুন এবং মনিটাইজেশনের যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ফলোয়ার ও ভিউ টাইমের লক্ষ্য পূরণ করুন।
ফেসবুকে ১০০০ ফলোয়ার থাকলে সরাসরি মনিটাইজেশন থেকে আয় করা সম্ভব নয়, তবে স্টার প্রোগ্রাম বা ব্র্যান্ড স্পনসরশিপের মাধ্যমে সীমিত আয় শুরু করা যায়। তবে, মনিটাইজেশনের পূর্ণ সুবিধা পেতে ১০,০০০ ফলোয়ার এবং ৬০,০০০ মিনিট ভিউ টাইমের মতো শর্ত পূরণ করতে হবে। নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি, দর্শকদের আকর্ষণ এবং ফেসবুকের নীতিমালা মেনে চললে ফেসবুক থেকে উল্লেখযোগ্য আয় করা সম্ভব।